মধ্য সপ্তাহে সারাদিন অফিস করে, রাত্রি সাড়ে নটায় বাড়ি ফেরার পথে, হঠাৎ করে আবিষ্কার করলাম এই কলকাতার রাস্তার সাথে একটা গানের খুব মিল আছে,
Tu na jaane aas paas hein Khuda !
কি ভাবছেন ? আমি ভগবানের কথা বলছি ?
একেবারে না !
আমি কলকাতার চেনা পথে প্রত্যেক ঘন্টায় ঘন্টায় গজিয়ে ওঠা অচেনা গর্তের কথা বলছি !!
বাংলায় যাকে বলে: রাস্তায় গর্ত খোঁড়া !
সেটাই, আমাদের রাষ্ট্রভাষায় : রাস্তা খুদা হে !!
এবার ব্যাপারটা হচ্ছে .. Tu na jaane aas paas hein Khuda … কেন বলছি !!
সারাদিনে, যে কোন সময়, আপনি বাড়ির ছাদে গিয়ে একটু কলকাতার রাস্তাগুলোকে
দু-চোখ মেলে দেখুন !
কি দেখবেন?
চারিদিকে গাছ, মশা এবং গর্ত ! তাই aas paas Khuda !
এবং বেশিরভাগ সময়ই এই গর্ত-গুলো গজিয়ে ওঠে আপনার অজান্তে | সকালে ছিল না, বিকেলে হলো ! কিংবা রাত্রে ছিল না, ভোরবেলা হলো !
বিগত পাঁচ বছর, (কিংবা হয়তো তার বেশী) ধরে কলকাতার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত Metro Rail চালু করার প্রচেষ্টা-তে, গর্তের যত্রতত্র আবির্ভাব বোধহয় একটু বেশি ঘটেছে !!
তারই মধ্যে দু’বছর করোনা-কালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শরীরটাকে অফিসে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটা ছিল, প্রায় বন্ধই !!
করোনার সাথে আরো একটা জিনিস এলো হাত ধরে, work-from-home. তাই গর্তের ঝাঁকুনি সহ্য করার ক্ষমতাও নষ্ট হলো শরীরের ||
কিন্তু দু’বছর পর, Corona বলল না আমি চললাম !
টিকা নেয়ার পর সব আমাকে পাত্তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে.
তার ফলে হলো কি?
মেট্রো র কাজ শেষ হলো না, কিন্তু অফিস-টা শুরু হয়ে গেলো.
তার সাথে বেড়ে গেলো বয়স, কিন্তু কমে গেলো শরীরের সহ্য ক্ষমতা.
তাতে কি হলো ??
গর্ত তো কমল-ই না, উল্টে Private গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় এবং MetroRail-এর কাজ জোর কদমে চলায় গর্তে-র সাথে দেখা দিলো ফাটলের.
যে পথ দিয়ে বাড়ি থেকে সকালে এলাম ২৫ টা গর্ত পেরিয়ে, সেই পথেই ১০ ঘন্টা পরে ফিরলাম ৩০ টা গর্ত পেরিয়ে.
চারিদিকে খোঁড়াখুঁড়ি..চোখে দেখছি..আর মনে ভাবছি…শহর বাড়ছে… উন্নত হচ্ছে.
তাই কি? হবে বোধহয়.
তবে একটা কথা ঠিক !
এই পথে উত্তম সুচিত্রা যদি মোটরবাইক চালিয়ে রোমান্টিক মুহূর্ত গুলো উপভোগ করার চেষ্টা করতেন– গানটা কখনোই বোধহয়…
এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো তুমি বলতো …. হতো না !!
হয়তো বদলে খের মশাই-এর গানটাই গাইতেন তারা–
Tu na jaane aas paas hein Khuda !!
————————————-
যাই হোক !!
কলকাতা-র পথে চলতে চলতে আপনার যদি মনে অন্য গানের উদয় হয় জানাবেন….
আমার মস্তিষ্ক নতুন গানের সন্ধানে.